Join Our Telegram
Daily Mock Test
Join Our Facebook

ভারতবর্ষে ১৫ তম মহিলা রাষ্ট্রপতির সংগ্রামের গল্প

আমরা প্রত্যেকটা মানুষ আমরা নিজেদের খুবই দুর্বল করে দেখি, সব সময় ভাবি যে এই পৃথিবীতে কেবলমাত্র আমাদের সময় খারাপ , সবকিছু আমার কাছে খারাপ হয়, অন্য সকল লোক ভালোভাবে জীবন যাপন করে কিন্তু কথাটা ঠিক নয়। আমরা সবসময় নিজেদেরই দোষারোপ করে থাকি। প্রত্যেকটা মানুষের জীবনে উত্থান পতন রয়েছে খারাপ ভালো রয়েছে তাই নিয়েই জীবন। জীবনে কোন সময় থেমে থাকতে নেই , আমাদের ১৫ তম রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এর অসংঘাতিক দুর্ঘটনার কথা আপনাদের জানাবো এবং তিনি কোন সময় থেমে থাকেননি। সব সময় এগিয়ে গিয়েছে। উনার জীবনের কিছু কথা থেকে আমরা কি উপলব্ধি করতে পারলাম কি শিখতে পারলাম , আপনাদের সে সব আমি এই ব্লগে জানাবো। আশা করি কিছু উপলব্ধি করতে পারবেন।

শ্রীমতি দ্রৌপদী মুর্মু  কে ?আজ আমি আপনাদের কথা বলব এমন একটি মহিলা সম্পর্কে যার দুটো ছেলে এবং একটি মেয়ে ছিল। কিন্তু দুটো ছেলেই যুবক বয়সে ওই পৃথিবী ছেড়ে চলে যায় আর ওনার স্বামী ও মারা যান। কিন্তু ভিতর থেকে ভেঙে যাবার পরেও উনি নিজের আত্মবিশ্বাস হারায়নি, আর জীবনে এত বড় কিছু অর্জন করে দেখিয়েছে যে আজ ওই মহিলা ভারতের প্রথম নাগরিক ভারতের সর্বোচ্চ পদে তিনি স্থান পেয়েছেন আপনারা ঠিকই বুঝতে পেরেছেন আমি আপনাদের কথা বলছি ভারতের ১৫ তম রাষ্ট্রপতি শ্রীমতি দ্রৌপদী মুর্মজির সম্পর্কে স্বাধীন ভারতবর্ষের ইনি প্রথম আদিবাসী রাষ্ট্রপতি হলেন ।

উনার জীবন থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে উনি আগে ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল ছিলেন আর যখন তিনি আমাদের আগের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন তখন হয়তো তিনি কল্পনাও করেননি যে তিনি আগামী রাষ্ট্রপতি হবেন।

দ্রৌপদী মসজিদ জীবন থেকে আমরা কি কি শিখতে পারি সেটা জেনে নেই উনার জীবন থেকে সবার প্রথম আমরা যে কথাটা শিখতে পারি সেটা হল পরিস্থিতির সামনে কখনোই মাথা নিচু করবেন না বরং পরিস্থিতিটাকে এমন একটি কারণ তৈরি করুন যাতে আপনি আপনার জীবনে অনেক উঁচুতে পৌঁছাতে পারেন ।

শ্রীমতি দ্রৌপদী মুর্মু জন্মগ্রহণ করেন ছিলেন ২০শে জুন ১৯৫০ সালে উড়িষ্যার ময়ূরভঞ্জ জেলার একটি গরীব আদিবাসী পরিবারে জন্মের পর থেকেই অনেক সমস্যা ওনার জীবনে ছিল উনার পরিবারে অনেক বেশি গরিব ছিল। উনার বাবার নাম ছিল বীরেন্দ্রনারায়ণ মুর্মু যিনি একজন কৃষক ছিলেন। কিন্তু শ্রীমতি ধ্রুপদী মুর্মুজি কখনো নিজের সমস্যা কে বড় করে দেখেননি। দ্রৌপদী যে নিজের গ্রামে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন এরপর তিনি ভুবেনেশ্বর এ রমাদেবী মহিলা কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেন। পড়াশোনা শেষ করার পরে নিজের মেয়েকে ভালো শিক্ষা দেবার জন্য নিজের শিক্ষিকার কাজ করেন। আর রাইরংপুর একটি স্কুল শিক্ষিকা হিসাবে পড়ানো শুরু করেন।

এখানে উনার জীবনের সমস্যা শেষ হয়ে যায়নি এখনো অনেক সমস্যা ওনার সামনে আসা কি ছিল। সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল এর মাঝেই ২০০৯ সালে ২৭ শে অক্টোবর সকাল সাতটার সময় উড়িষ্যার রাজধানী ভুবেনেশ্বর একটি বাড়িতে ২৫ বছরের একটি যুবকের লাশ পাওয়া যায়। আর ওই ছেলেটি আর কেউ ছিল না শ্রীমতি দ্রৌপদী মূর্মুর ছেলে ছিল । যার নাম হলো লক্ষণ মুর্মু, উনার এই রহস্যময় মৃত্যুর কারণ আজও জানা যায়নি। আর ২০১৩ সালে অর্থাৎ চার বছর পর উনার আরেকটি ছেলে রোড এক্সিডেন্ট মারা যায়। নিজের দুটো যুবক ছেলের মৃত্যুর পরে দ্রৌপদী জি অনেক ভেঙ্গে পড়েছিলেন। আর ২০১৪ সালে উনার স্বামী ও মারা যান। আর এখন শ্রীমতি দ্রৌপদী জির পরিবারে কেবলমাত্র ওনার মেয়ে ছিল, আর ওনার মেয়ে একটি ব্যাংকে চাকরি করতো। দ্রৌপদী জির জীবনে এত দুর্ঘটনা ঘটার পরে তিনি ভেতর থেকে ভেঙে পড়েছিলেন।

তাই তিনি সবশেষে আশ্রমে যাওয়া শুরু করেন। আর রাজস্থানের মাউন্ট আবু আশ্রম মেডিটেশন করা শুরু করেন যাতে করে নতুন জীবন শুরু করতে পারেন। অর্থাৎ পরিস্থিতি যতই খারাপই হয়ে যাক না কেন আপনাকে পাহাড়ের মত হতে হবে এবং ওই পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে হবে এছাড়া ওনার জীবনের থেকে আমরা আর যেটা শিখতে পারি ,

যেটা হলো জীবনে সৎ থাকাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ আপনি সততার সঙ্গে চলতে থাকলে একদিন না একদিন আপনি বড় কিছু অর্জন অবশ্যই করবেন।

সবাই বলে মহিলাদের জন্য রাজনীতিটা অনেক কঠিন আর সেখানে শ্রীমতি দ্রৌপদীজির এতদূর পর্যন্ত পৌঁছানোটা সাধারণ কিছু নয় । সারা পৃথিবী আজ ওনার সম্পর্কে কথা বলছে কারণ উনি উনার জীবনে অনেক সংঘর্ষের মোকাবেলা করেছেন। উনার রাজনীতি জীবন বিজেপির সঙ্গে শুরু করেন উড়িষ্যাতে ১৯৯৭ সালে প্রথম ভোটে জয় হন। এরপর পার্টির তরফ থেকে উনাকে আদিবাসীর প্রেসিডেন্ট তৈরি করে দেওয়া হয়। আর ২০০০ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত বিজেপি এবং বিজেডি যুক্ত যে সরকার ছিল সেখানে তিনি মন্ত্রী হন। আর ২০০২ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত উড়িষ্যার মিনিস্টার হয়ে থাকেন।

এরপরে উনার জীবনে যাই কিছু হয়েছে সেটা তো আপনাদের আগেই বললাম। এরপর ২০১৫ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত উনাকে ঝাড়খন্ডে রাজ্যপাল নির্বাচিত করা হয়। আর ২০২২ এ ভারতবর্ষে প্রথম আদিবাসী মহিলা রাষ্ট্রপতি।

উনার জীবনের এই রাস্তা আমাদেরকে বলে জীবনে আপনি সঠিক রাস্তা বেছে নিন। সেই রাস্তায় চলতে থাকুন একদিন না একদিন আপনি আপনার লক্ষ্য অবশ্যই পাবেন। উনার জীবন থেকে আমরা এটাও শিখতে পারি জীবনে সবসময় সৎ থাকাটা প্রয়োজন। উনি যখন রাজ্যপাল নির্বাচিত হয়েছিলেন তখন উনি সরকার এবং বিরোধী সবার কথা শুনতেন। উনার দরজা সমস্ত সংগঠনের নেতাদের জন্য খোলা থাকতো।

আর সবশেষে উনার জীবন থেকে আমরা যেটা শিখতে পারি আপনার জীবনের পুরনো স্মৃতিগুলো থেকোও আপনি নিজেকে মোটিভেট করতে পারেন

শ্রীমতি দ্রৌপদী মুর্মুর আগস্ট ২০১৬ তে উনার পুরনো বাড়িকে স্কুলে পরিণত করেছেন। আর প্রতি বছর স্বামী এবং সন্তানের মৃত্যুবার্ষিকীতে সেখানে অবশ্যই যান।

সবশেষে আপনাদের বলতে চাই কেউ একবার একটি জ্ঞানী মানুষকে জিজ্ঞেস করেছিল আপনাদের সমাজকে আগে নিয়ে যাবার জন্য কি করা দরকার? তখন ওই জ্ঞানী মানুষটির বলেছিল "একে অপরের পা ধরে না টেনে একে অপরের হাত ধরে টানা উচিত এবং সবাই মিলে এগিয়ে যাওয়া উচিত"। আজ শ্রীমতি দ্রৌপদী মুরমুদের জীবনী আমাদের কে এটাই শেখায়


আপনার জিজ্ঞাসা 

শ্রীমতি দ্রৌপদী মুর্মু কে ছিলেন ?
ভারতবর্ষে ১৫ তম মহিলা রাষ্ট্রপতির কে নির্বাচিত হলেন ?
শ্রীমতি দ্রৌপদী মুর্মুএর জন্ম কত সালে ?
ভারতবর্ষে প্রথম আদিবাসী মহিলা রাষ্ট্রপতিনাম কি?



Post a Comment

Previous Post Next Post